হেলাল উদ্দিন অন্তর
আধুনিক বিশ্বে মাদকের পাশাপাশি অনলাইন ক্যাসিনো পরিবার ভঙ্গন সুখ শান্তি হরনের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে প্রযুক্তির উন্নয়নে শহর থেকে গ্রামে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এর ব্যাপক প্রসার প্রচার ঘটেছে।
আবাল বৃদ্ধ-বনিতা শিক্ষিত দিনমজুর শ্রমজীবী ছাত্র শিক্ষক সবাই অনলাইন ক্যাসিনুর আগ্রাসনের আসক্ত হয়ে পড়ছে। ফেসবুক, ইউটিউব, টিক টক বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় রঙিন বাহারি বিজ্ঞাপন দেখে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে শুরু করে অনলাইন ক্যাসিনো।
দু একবার লাভবান হলেও যে স্বপ্ন নিয়ে খেলা শুরু করে অল্প দিনের মধ্যেই সবকিছু হারিয়ে তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে থাকে। অনুসন্ধানে দেখা যায় ক্যাসিনো অনলাইন জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে কর্মজীবি, শিক্ষক, সহ পেশাজীবি দম্পতির ভাঙ্গনের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। আসহায় হয়ে পড়ছেন অভিভাবকেরা।
অনেক সময় নবজাতক নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপদে নারীরা। না পাড়ছে কোন কর্ম করতে না পাড়ছে সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে। এক ভুক্তভোগী বলেন আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত আছি। আমার স্বামী একটি কলেজের লেকচারার। বিয়ের কিছুদিন পর তার মাঝে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করি। আমাকে সময় না দেয়া, মোবাইলে গেম খেলা, গভীর রাতে বাড়ি ফেরা। আমি প্রথমে বিষয়গুলো বুঝতে পারি নাই পরে দেখি সে অনলাইন ক্যাসিনোর সাথে জড়িয়ে নিজেকে আসক্ত করে ফেলেছে। বর্তমানে পরিবার কর্মস্থল সবকিছু ছেড়ে দিয়ে ক্যাসিনো খেলায় মেতে থাকে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এভাবে চলতে থাকলে তার সাথে সংসার কন্টিনিউ করা সম্ভব না। নাজমা নামে আরেক ভুক্তভোগী আমাদেরকে জানায়, আমার বিয়ের বয়স তিন বছর এবং তিন মাসের একটা বাচ্চাও রয়েছে। একমাস যাবৎ আমাকে বাপের বাড়ি রেখে গেছে কোন খোজ খবর নেয় না সারাদিন শুধু মোবাইলে গেম নিয়ে পড়ে থাকে। বিবাহের প্রথম দিকে আমরা খুব ভালো দিন কাটাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে সে যখন, অনলাইন জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ায় সংসারে প্রায় সময় ঝগড়া কলহ লেগেই থাকে। আয় রোজগারে কোন মনোযোগ নাই আমাদের নবাগত সন্তানের প্রতি কোন খেয়াল নাই। টাকা পয়সা সব হারিয়ে এখন সর্বশান্ত হয়ে গেছে। আমার বাবা নেই , শিশু বাচ্চা রেখে নিজেও কোন কাজ করতে পাড়ছি না। অনলাইন ক্যাসিনো যেমনি পরিবার ভাঙছে তেমনি টিনেজ শিশুরাও বিভিন্ন প্রকার গেমে আসক্ত হয়ে শিক্ষাবিমোখ হয়ে যাচ্ছে।