খিলক্ষেতে চেক প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার নজরুল ইসলাম,জামিন পেতে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন

আজ খিলক্ষেত থানার পুলিশ দুই লক্ষ ষাট হাজার টাকার চেক প্রতারণা মামলায় মোঃ নজরুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। জানা যায় নজরুল ইসলামের পিতার নাম আবদুল কাদের মৃধা। যার স্থায়ী ঠিকানা,গ্রামঃ নাচনা পাড়া,পোঃ নাচনা পাড়া-৮৭২১,পাথরঘাটা, জেলাঃ বরগুনা। অভিযোগের আলোকে সম্প্রতি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে আসামী নজরুল ইসলামের নামে একটি গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসামি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বাদি সুমি আক্তারের কাছ থেকে ব্যবসায়িক কাজে তিনবারে মোট ৩,৯০,০০০ (তিন লক্ষ নব্বই হাজার টাকা) মাত্র ধার নিয়ে থাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত দেবে বলে আসামী নজরুল ইসলাম তার নিজের নামে তিনটি ব্যাংকের চেক প্রদান করে বাদী সুমি আক্তার কে। পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ে টাকা ফেরত না দিয়ে আসামি নজরুল ইসলাম গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকে। একসময় বাদি সুমি আক্তার বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে আসামি নজরুল ইসলাম উত্তরার আজমপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের পাশের, (শাহাজালাল এভিনিউ),বাড়ি-১৪,রেংস নাহারাজের লিফটের- ৪,একটি ভুয়া (ই- ব্যাংক) নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। বাদির এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে গোপনে সাংবাদিকরা বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। সাংবাদিকদের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় আসামি নজরুল ইসলাম আরো তিন সহোযোগি মিলে ই-ব্যাংক নামে একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠান খুলে। যার একটি ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আর কোন কাগজ দেখাতে পারিনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তাদের এই ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অসহায় মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা করার নামে এককালীন অর্থ আত্মসাৎের  নতুন এক প্রতারণার করে আসছে। তাদের এমন প্রতারণা শিকার স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী,বেকার যুবক, গৃহিণী ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এই প্রতারণার শিকার একজন বাদী সুমি আক্তারকে আসামী নজরুল ইসলাম অদ্য- ০৪/০২/২০২৪ ইং তারিখে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিঃ একটি ২,৬০,০০০ টাকার একটি চেক, যার নাম্বার( ১০৩৮৯১৭) হিসাব নং- ২০২১১০০০১৮৬৫২,  প্রদান করে, যা পরে বাদি সুমি আক্তার অদ্য ১৮/০৩/২৪ ইং চেকের টাকা আশকোনা শাখার ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। চেকটি প্রতারণার শিকার হওয়ায় সুমি আক্তার অদ্য ১৯/০৩/২৪ ইং তারিখে আইনজীবীর মাধ্যমে ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারা মোতাবেক এ/ডি সহ রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশে প্রেরণ করিয়া নোটিশ প্রদানের তারিখ হইতে ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে নালিশী চেকটিতে প্রাপ্ত ২,৬০,০০০ (দুই লক্ষ ষাট হাজার) টাকা পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে নির্ধারিত ৩০(ত্রিশ) দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও উক্ত চেকের টাকা পরিশোধ করেন নাই। পরবর্তীতে অভিযুক্ত ব্যক্তির উপরোক্ত কর্মকান্ডে প্রমানিত হওয়ায় আদালত আসামী The Negotiable Instrument Act, ১৮৮১ ( ২০০৬ সালে সংশোধিত) এর ১৩৮ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় এবং অপরাধের শাস্তি এড়াতেই এবং বাদীকে তাহার প্রাপ্য টাকা হতে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে বাদী হুজুরাদালতে অত্র মামলা রুজু করিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড় সাক্ষীগণ বিজ্ঞ আদালতে বিষয়টি প্রমান করিবেন এবং আদালতের মাধ্যমে এ বিষয়ে গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। 

আদলতের রায়ে খিলখেত থানা পুলিশ এসআই ফজলে এলাহীর নেতৃত্বে আজ দুপুর ২ টায় রাজধানী উত্তরা আজিমপুর এলাকা থেকে আসামি নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেন। 

এছাড়া, আসামি একই ব্যক্তির কাছে আরো দুটি চেক, একটি ১,০০,০০০ টাকা যার হিসাব নং- ৫৯৭৫১৯৩ ব্র্যাক ব্যাংক,  

এবং অপরটি ৩০,০০০ টাকা যার হিসাব নং- ১০৩৮৯১৬ ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রদান করেন। তবে অদ্য ১৮/০৩/২৪ ইং তারিখে আশকোনা শাখায় ৩০,০০০ টাকার চেকটি ডাচ বাংলা ব্যাংকে উত্তোলন করতে না পেরে ডিজাইনার করে। কিন্তু সেগুলোর বিরুদ্ধে এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি।

এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানা অফিসার ইনচার্জ জনাব আজাহারুল ইসলাম জানায়, আসামি নজরুল ইসলামকে তার নিজ অফিস উত্তরার আজিমপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৩৮ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অপরাধমূলক এই কার্যকলাপে আসামির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং তাকে শীঘ্রই আদালতে হাজির করা হবে বলে জানায় পুলিশ